কাশ্মীরের ক্ষতবিক্ষত আসিফা ও ঘৃণার যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়
কাশ্মীরের ক্ষতবিক্ষত আসিফা ও ঘৃণার যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়
==
কাশ্মীরের মন্দিরে পূজারী ও হিন্দু পুলিশ দিয়ে ধর্ষিত ও মাথায় পাথর মেরে হত্যা করা আসিফার খবরটি সবাই জানেন। মুসলমান মেয়েকে ধর্ষণ করায় অভিযুক্তরা কাশ্মীরের হিন্দুদের নিকট এখন হিরো হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
==
কাশ্মীরের মন্দিরে পূজারী ও হিন্দু পুলিশ দিয়ে ধর্ষিত ও মাথায় পাথর মেরে হত্যা করা আসিফার খবরটি সবাই জানেন। মুসলমান মেয়েকে ধর্ষণ করায় অভিযুক্তরা কাশ্মীরের হিন্দুদের নিকট এখন হিরো হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
পুরো খবরটির মধ্যে যে অংশটি উল্লেখযোগ্য, তা হলো ধর্ষক মন্দিরের পুরোহিতের নাবালক ছেলেও এই কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। সে তার চাচাতো ভাইকে উত্তর প্রদেশের মীরাট থেকে কাশ্মীরে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল ৮ বছরের আসিফাকে ধর্ষণ করার জন্য। বিবিসির খবরে এসেছে, পরবর্তীতে যখন আসিফাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়, তখন ধর্ষণকারীরা সক্ষম হয় না আসিফাকে হত্যা করতে। সেই নাবালকই তখন আসিফার মাথায় পাথর মেরে থেতলে তাকে হত্যা করে।
কিছুদিন আগে রাজস্থানে আফরাজুলকে কুপিয়ে হত্যা করেছিল শম্ভুলাল রেগর, মনে পড়ে অছাম্প্রদায়িক মুসলমানদের? সেই কুপিয়ে হত্যার ভিডিও করেছিল শম্ভুলালের ‘নাবালক’ ভাতিজা। মিডিয়াতে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছিল যে, এধরণের বীভৎস দৃশ্য ভিডিও করার সময় শম্ভুলালের নাবালক ভাতিজার হাত একবারের জন্যও কেঁপে উঠেনি!
হ্যাঁ হিন্দুরা তাদের সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই যেভাবে মুসলমানদের প্রতি ঘৃণার শিক্ষা দেয়, মুসলমানরা তো তাদের সন্তানদের সেভাবে দেয় না। নীরদ সি চৌধুরী তার আত্মজীবনী ‘অটোবায়োগ্রাফি অফ এন আননোন ইন্ডিয়ান’ বইতে লিখেছিল-
“Nothing was more natural for us than to feel about the Muslims in the way we did. Even before we could read we had been told that the Muslims had once ruled and oppressed us, that they had spread their religion in India with the Koran in one hand and the sword in the other,
মুসলমানদের প্রতি হিন্দুদের যে তীব্র ঘৃণা ও বিদ্বেষ, সে বিষয়টি ফুটিয়ে তুলতে নীরদ সি চৌধুরী ‘নাথিং ওয়াজ মোর ন্যাচারাল’ কথাটি উল্লেখ করেছে। ‘ন্যাচারাল’ বলতে স্বাভাবিক বা প্রকৃতিগত বিষয়কে বোঝায়, যেমন খাওয়া ঘুম ইত্যাদি। এসবের চেয়েও হিন্দুদের নিকট ‘ন্যাচারাল’ বা প্রকৃতিগত বিষয় হচ্ছে মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা পোষণ।
এমনি এমনি পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়নি যে, “নিশ্চয়ই তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে প্রথমত ইহুদীদের, অতঃপর মুশরিকদের।” দুনিয়ায় বেঁচে থাকার গাইডলাইন হিসেবেই কুরআন শরীফে বলা হয়েছে কাফির মুশরিকদের ঘৃণা করতে। কারণ কাফির মুশরিকরা মুসলমানদের যে পরিমাণ ঘৃণা করে, মুসলমানরা যদি পাল্টা তার চেয়ে বেশি ঘৃণা পোষণ করতে না পারে কাফির মুশরিকদের প্রতি, তাহলে মুসলমানরা কাফির মুশরিকদের দ্বারা গোলামির জিঞ্জিরে আবদ্ধ হতে বাধ্য।
প্রাথমিক যুগে ছাহাবায়ে কিরামগণ এই ঘৃণার যুদ্ধে জয়ী হতে পেরেছিলেন, কারণ কাফির মুশরিকদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করার জন্য যে ঈমানী শক্তির প্রয়োজন, মুসলমানিত্বের প্রয়োজন, তা উনাদের পুরোটাই ছিল। ইসলামের প্রাথমিক যুগে মাত্র ১৬ বছর বয়সে সিন্ধু বিজয় করেছিলেন মুহম্মদ বিন কাসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি, এতে বোঝা যায় যে তখন মুসলমানরা শিশুকাল থেকেই সন্তানদের মধ্যে কাফির মুশরিকদের প্রতি ঘৃণাবোধ সঞ্চারিত করতেন। একারণেই মুসলমানরা একদা সারাবিশ্ব শাসন করতে পেরেছিলেন।
বিপরীতে বর্তমান মুসলমানরা কাফির মুশরিকদের কাছে হেরে যাচ্ছে ঘৃণার যুদ্ধে পরাজয়ের কারণে। ফিলিস্তিনিরা যে ইসরায়েলের অধীনস্থ হয়েছে, এর কারণ ইসরায়েলের আশেপাশের দেশগুলোতে রয়েছে তীব্র ইহুদীপ্রীতি। মিসরের মুসলমানরা ইহুদীদের ভালোবাসে, জর্দান ইহুদীদের ভালোবাসে, সৌদি আরবও ইহুদীদের ভালোবাসে। কিন্তু ইহুদীরা ঠিকই মুসলমানদের ঘৃণা করে। এই ঘৃণার সমতা বিধান হচ্ছে না বলেই মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানরা ইহুদীদের হাতে মার খাচ্ছে।
ঠিক একই অবস্থা হচ্ছে ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে। যতোই হিন্দুরা তাদেরকে মারুক, ভারতীয় মুসলমানরা কিন্তু ঠিকই হিন্দুদেরকে ভালোবাসে। এই বিষয়টি আবার বাংলাদেশের কোন মুসলমান চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে গেলেই তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ভারতীয় মুসলমানরা। আরে বাংলাদেশ হলো গিয়ে ছোট দেশ, আমরা ভারতীয় মুসলমানরা যতোই রাখি বাঁধি আর রামায়ণ পড়ি, আমাদের উপদেশ দেয়ার অধিকার বাংলাদেশের মুসলমানদের নেই। (https://bit.ly/2JIskD1)
তীর-তলোয়ার-বন্দুক মূল বিষয় নয়, মূল বিষয় হলো জাতি ‘মোরালাইজড’ কিনা? তারা তাদের শত্রুদেরকে শত্রু হিসেবে ঘৃণা করতে পারে কিনা, তারা তাদের শত্রুকে বধ করার মানসিক শক্তি রাখে কি না? বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্য থেকে হিন্দুদের প্রতি যে ঘৃণা, সেটি সরিয়ে নেয়াটাই কিন্তু বর্তমানে প্রতিপক্ষের মূল উদ্দেশ্য। এই পহেলা বৈশাখ কেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা কেন? প্রত্যেকটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের মধ্যে হিন্দুদের প্রতি ভালোবাসা সঞ্চারিত করা, ঘৃণাবোধকে তুলে নেয়া। কেন বিজিবিকে দিয়ে বিএসএফের সাথে হোলিপূজার শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়, মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ঘৃণাবোধকে ধ্বংস করা।
অছাম্প্রদায়িক হলেন, তো সারাবিশ্বের অস্ত্রভাণ্ডার সাথে থাকা সত্ত্বেও আপনি কিন্তু হেরে গেলেন। বিষয়টি মুসলমানরা ভালোভাবে অনুধাবন করার চেষ্টা করুন।
Courtesy: Dastaar Rajdarbaar
Courtesy: Dastaar Rajdarbaar
Kommentarer
Skicka en kommentar