হিন্দুস্তানে হিন্দু মাত্রেই সভ্য বলিয়া গৃহীত হইতে চাহিলে মুসলমানী রীতি ধরিত

হিন্দুস্তানে হিন্দু মাত্রেই সভ্য বলিয়া গৃহীত হইতে চাহিলে মুসলমানী রীতি ধরিত, অর্থাৎ তাহাদের ভাষা হইত উর্দু, পোষাক হইত আচকান ইত্যাদি, আদব-কায়দাও হইত মুসলমানসুলভ। এখন যেমন সামাজিক প্রতিষ্ঠা জন্য লোকে সাহেব হইতে চায়, তখন তাহারা মুসলমান হইত। ইহা ছাড়া সামাজিক জীবনে বিদগ্ধ হিন্দু, মুসলমানেরই সঙ্গে মেলামেশা করিত বেশি।” (সূত্র: নির্বাচিত প্রবন্ধ, নীরদচন্দ্র চৌধুরী, পৃষ্ঠা ২২৩)
১৯৬৬ সালে প্রাবন্ধিক নীরদ সি চৌধুরী ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে উপরোক্ত মন্তব্যটি করেছিল। উল্লেখ্য, ১৮৮৬ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, জনসংখ্যার মাত্র ১৩.৪ শতাংশ হওয়ার পরও উত্তরপ্রদেশের প্রশাসন ও বিচার বিভাগের ৪৫ শতাংশ পদ মুসলমানদের হাতে ছিল।
বাংলায় যখন মুসলিম শাসন জারি ছিল, তখন বাংলার অবস্থাও ভিন্ন কিছু ছিল না। নীরদ সি চৌধুরী তার ‘আত্মঘাতী বাঙালী’ বইতে এ প্রসঙ্গে লিখেছে, “মুসলমান যুগে সম্পন্ন বাঙালী হিন্দু সামাজিক মর্যাদার খাতিরে মুসলমানী পোষাক পরিত ও ফারসী বলিত। ইহার পর তাহারা ইউরোপীয় ধরণের পোষাক পরিয়া ইংরেজিতে কথা বলিতে লাগিল।”
কেন এ বৈপরীত্য? কারণ পলাশীর যুদ্ধের পর বাংলায় ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ প্রণয়ন করে মুসলমানদের জমিগুলো কেড়ে নিয়ে হিন্দুদের দিয়েছিল ব্রিটিশরা। এ অঞ্চলে মুসলমানদের সম্পদ কেড়ে নিয়ে রেখে হিন্দুদের সুবিধা দেয়ার যে নীতি খ্রিস্টানরা নিয়েছিল, তা ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে ছিল না। ফলশ্রুতিতে যেখানে বাংলায় হিন্দুপ্রাধান্য দেখা গিয়েছিল, সেখানে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে মুসলিমপ্রধান সমাজব্যবস্থা জারি ছিল সাতচল্লিশের পরও!
এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো। বর্তমানে বাংলাদেশের মুসলমানরা প্রতিষ্ঠিত, আর হিন্দুস্তানের মুসলমানরা কোন চাকরি পায় না। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে হিন্দু প্রাধান্য। ব্রিটিশআমলে বাংলায় হিন্দুপ্রাধান্য ছিল, হিন্দুস্তানে ছিল না। বিপরীতে সাতচল্লিশের পর বাংলায় মুসলিম প্রাধান্য পুনঃস্থাপিত হয়েছে, আর হিন্দুস্তান চলে গিয়েছে হিন্দুদের দখলে।
যেখানে হিন্দুদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সেখানে মুসলমানরা চাকরি-ব্যবসা-শিক্ষা সহ কোনপ্রকার সুযোগ লাভেরই আশা করতে পারে না। বাংলার ভূমিকে আমাদের পূর্বপুরুষরা একদা আলাদা করেছিল, যেন তারা ফিরে পায় মুসলিম দেশে মুসলমানদের অধিকার। কিন্তু বর্তমানে সেই চেতনা আমাদের থেকে বিলুপ্ত হয়েছে, যার ফলে আমরা ইতিহাস ভুলে গিয়েছি এবং এই ভূখণ্ডে ফের নিজ হাতে হিন্দু প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করে নিজেদের হাতেই নিজেদের গলায় ছুরি চালাচ্ছি।

Kommentarer

Populära inlägg i den här bloggen

সি আই এ মোসাদ এর প্রজেক্ট হলো ইনসেস্ট তথা বাবা-মেয়ে,মা-ছেলে, ভাই-বোন অবৈধ সম্পর্ককে প্রমোট করা।

পতিতা ব্যবসায়ী রবীন্দ্রনাথ এবং দালাল মিডিয়া

বাংলাদেশে পতিতাদের সংগঠনগুলোই বলছে- বাংলাদেশে ১৮ বছরের নিচে পতিতাদের সংখ্যা ৬৪% এবং তারা আরো জানাচ্ছে, ৯০% পতিতা তাদের দেহব্যবসা শুরু করে শিশু বয়স থেকেই।